Friday, May 1, 2020

'মে দিবস'

মে দিবসের কবিতা
--- সুভাষ মুখোপাধ্যায়
প্রিয়, ফুল খেলবার দিন নয় অদ্য
ধ্বংসের মুখোমুখি আমরা,
চোখে আর স্বপ্নের নেই নীল মদ্য
কাঠফাটা রোদে সেকে চামড়া।
চিমনির মুখে শোনা সাইরেন-শঙ্খ,
গান গায় হাতুড়ি ও কাস্তে,
তিল তিল মরণেও জীবন অসংখ্য
জীবনকে চায় ভালবাসতে।
প্রণয়ের যৌতুক দাও প্রতিবন্ধে,
মারণের পণ নখদন্তে;
বন্ধন ঘুচে যাবে জাগবার ছন্দে,
উজ্জ্বল দিন দিক্-অন্তে।
শতাব্দী লাঞ্ছিত আর্তের কান্না
প্রতি নিঃশ্বাসে আনে লজ্জা;
মৃত্যুর ভয় ভীরু বসে থাকা, আর না-
পর পর যুদ্ধের সজ্জা।
প্রিয়, ফুল খেলবার দিন নয় অদ্য
এসে গেছে ধ্বংসের বার্তা,
দুর্যোগে পথ হয় হোক দুর্বোধ্য
চিনে নেবে যৌবন-আন্তা।।
আজ 'মে দিবস'। ঐতিহাসিক ভাবে যেমন এই দিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন ঠিক তেমনি এই দিনটি সাহিত্যে ক্ষেত্রেও যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। পৃথিবীতে কোনো আন্দোলনের পথ কখনো মসৃণ হয় না। সেই পথের প্রতিটি বাঁকে থাকে নানা ঘটনা, জুলুম, অত্যাচার, ধর্মঘট, মিছিল। তাই এই 'মে দিবস'ও একদিনে পরিণতি পায়নি.. এর পেছনে ছিল দীর্ঘ সংগ্রামের ইতিহাস। সেই ছবি দেখা গেছে একাধিক সাহিত্যেও।
 তাই সহজ ভাষায় বলতে গেলে এই 'মে দিবস' হল পৃথিবীর মেহনতী মানুষদের সঙ্কল্প গ্রহণের দিন। সেই সঙ্কল্প হলো সামাজিক পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে শ্রেণীবৈষম্যের বিলোপ সাধন ও পুঁজিবাদীদের দাসত্বশৃঙ্খল থেকে মুক্তি। এই 'মে দিবস'ই শ্রমিকশ্রেণীতে এনে দিয়েছে চিন্তা ও চেতনার এক বৈপ্লবিক তাৎপর্য।
 আর আজকের এই বর্তমান পরিস্থিতিতে সারা বিশ্বে যখন চলছে এক ভয়াবহ মৃত্যুমিছিল, সকল মানুষ যখন হয়ে রয়েছে গৃহবন্দী। তাই, অর্থনৈতিক বিপর্যয় যখন কড়া নাড়ছে প্রতিটি দেশের দরজায় তখনো সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতি এগিয়ে আসছে এই শ্রমিকশ্রেণীর দিকেই। বিপর্যয়ের প্রথম উপহার স্বরূপ তারাই পাবে বেকারত্ব। কিন্তু, কোনোভাবে যদি সেই বেকারত্বের হাত থেকে বাঁচানো যায় এই বিশ্বকে তবেই সার্থক হবে এই 'মে দিবস'।

No comments:

Post a Comment

Shilajit Resin

Shilajit Resin Tap into your full potential with India’s first clinically researched, purified shilajit resin, sourced from 18,000 feet of t...